মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১২

আট দলকে ইসির চরমপত্র

আট দলকে ইসির চরমপত্র
লিংকন মাহমুদ
 
ঢাকা, 13 নভেম্বর : জামায়াতে ইসলামীসহ আট রাজনৈতিক দলকে গঠনতন্ত্র সংশোধনে চরমপত্র দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গঠনতন্ত্র সংশোধনে দলগুলোকে আগামী মাসের (ডিসেম্বর) ৫ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার ইসির সচিবালয় থেকে দলগুলোকে চিঠি দিয়ে এ চরমপত্র জানিয়েছে। ইসির একাধিক সূত্রে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে জামায়াত ইসলামী দলের পক্ষ থেকে ইসির চিঠি প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়েছে। তাদের দাবি দলের শীর্ষ নেতারা কারাগারে থাকায় এই মুহুর্তে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছে না।

জামায়াতে ইসলামী বাদে বাকি সাত দল হলো- হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি, একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়ত-ই-উলামা বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট  ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর ইসলামী ঐক্যজোট ও জমিয়ত-ই-উলামা ইসলামকে কমিশন সচিবালয় থেকে এ তাগিদপত্র পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে এ সংশোধনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।


জামায়াতের গঠনতন্ত্রে ত্রুটি প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ সাংবাদিকদের জানান, দলটি এর আগে জানিয়েছিল যে, তারা তাদের মজলিশে সুরার মাধ্যমে গঠনতন্ত্র সংশোধন করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তা করেনি। এ কারণেই তাদের সময় নির্ধারণ করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কোনো দলের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে নির্বাচন কমিশনে সে দলের নিবন্ধন থাকতে পারে না।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আকতার স্ব^াক্ষরিত চিঠিতে জামায়াতকে তাদের গঠনতন্ত্রের ২ এর (৩), ৫ এর (৩), ৬ এর (৪), ৭ এর (১-৪), ১১ এর (২), এবং ১৮ এর (৪ এর ছ) ধারাগুলো সংশোধনের কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী জামায়াতের গঠণতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় দলটিতে তাদের গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনাও সংশোধনের আহবান জানায় ইসি।

সূত্র জানায়, এর আগেও তিনবার জামায়াতকে তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য ইসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। ইসির আহ্বানে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দলটির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কমিশনের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় একই চিঠিতে।


বিকল্পধারা সম্পর্কে জানা যায়, দলটির গঠনতন্ত্রের ৩ এর ৪-৩০ (খ) ধারা আরপিও পরিপন্থি। এ ধারায় বলা হয়েছে, দলের মনোনীত ১০ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য থাকবে। কিন্তু আরপিওতে সব পর্যায়ে নির্বাচিত কমিটি থাকার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় পার্টির সমস্যা তাদের গঠনতন্ত্রের ২১ (৪) ধারা নিয়ে। এ ধারায় বলা হয়েছে, তৃণমূল কমিটির সুপারিশের বাইরেও প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড এখতিয়ার থাকবে। কিন্তু এধরণের ক্ষমতা আরপিও পরিপন্থি। অন্যান্য দলগুলোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো সমস্যা নেই। এর আগে এসব দলের কয়েকটি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে আলাদা কাগজে লিখে আগের গঠনতন্ত্রে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছে। কমিশন এসব দলকে তাদের সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ৩টি করে মুদ্রিত কপি জমা দিতে বলা হয়েছে।



রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রে ত্রুটি প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ বলেন, ৮টি দলেরই গঠনতন্ত্রে ত্রুটি রয়েছে। এদের সবাইকে তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধনের সময় দেওয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন