মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আ’লীগে অস্বস্তি, মরিয়া জামায়াত

উপজেলা নির্বাচন

আসন্ন চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে এক ধরনের অস্বস্তি বিরাজ করছে। অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় সরকার এক ধরনের নৈতিক বৈধতা পাচ্ছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে থাকায় অস্বস্তিতে ভুগছে আওয়ামী লীগ।

আর সদ্য জাতীয় নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে। একক প্রার্থী নির্ধারণেও হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে তফসিল ঘোষিত প্রায় সব উপজেলাতেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন।

অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক মাঠে কোণঠাসা জামায়াতে ইসলামী উপজেলা নির্বাচনে চমক দেখাতে চায়। দলের চরম ক্রান্তিকালে উপজেলা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে তারা। ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য প্রথম দফার ৯৭টি উপজেলা নির্বাচনে ২৮টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জামায়াত। এর মধ্যে কমপক্ষে ১৫টিতে জয় পেতে মরিয়া দলটি।

আওয়ামী লীগে অস্বস্তি

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। দলটির একাধিক নীতি-নির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা দ্য রিপোর্টকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপি সরকারকে নৈতিকভাবে বৈধতা দিয়েছে। এতে সরকারের অস্বস্তি অনেকটা দূর হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের পাশাপাশি বিএনপির অংশগ্রহণে নতুন করে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রেকর্ডসংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। দলটির প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াত এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বিদ্রোহী ঠেকাতে বেশ কয়েক দফা সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু সব পদক্ষেপই ব্যর্থ হওয়ায় অনেকটা নিরূপায় হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগ। ফলে দল সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে স্থানীয় পর্যায় থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারও করা হচ্ছে।

এদিকে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারকে বৈধতা দিচ্ছে বলেও মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এক অনুষ্ঠানে বলেন, নাকে খত দিয়ে শেখ হাসিনার অধীনে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বিএনপি বার বার অবৈধ বললেও এখন সে অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অর্থাৎ বিএনপি বর্তমান সরকারের বৈধতা মেনে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ নেওয়ায় তিন পদেই একক প্রার্থী দিতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মৌখিক নির্দেশ দেন। এতে কাজ না হওয়ায় একই নির্দেশনা দিয়ে সব জেলায় শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়। নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। তাতেও হালে পানি না পেয়ে অবশেষে কেন্দ্রীয়ভাবে সাত বিভাগে কেন্দ্রীয় ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সমন্বয়ে সাতটি টিম পাঠানো হয়। তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাহারের জন্য সর্বোচ্চ চাপ দেয়। এতেও কাজ না হওয়ায় এখন সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে আওয়ামী লীগ।

সূত্রমতে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ায় আওয়ামী লীগকে কঠিন ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। যে সব এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি সে সব স্থানেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসবভন গণভবনে বুধবার সন্ধ্যায় দলের কার্যনির্বাহী সংসদের এক জরুরি সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র আরও জানায়, ওই বৈঠকে সর্বপ্রথম বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রসঙ্গ তোলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপর এটি নিয়ে বেশ উত্তপ্ত আলোচনা হয়। এ সময় অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মত দেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা নির্বাচন সমন্বয়ক বিএম মোজাম্মেল হক দ্য রিপোর্টকে বলেন, আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কোনো দল যদি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে তাতে আওয়ামী লীগ তাদের অভিনন্দন জানাবে। বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আওয়ামী লীগের অস্বস্তিতে পড়ার কিছু নেই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। দলে একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকতেই পারে। যেভাবে বিদ্রোহী প্রার্থী আছে বলা হচ্ছে, ততটা নয়। তবে আমরা আশা করছি নির্বাচনের আগেই যে দুই-একটি জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থী আছে সেগুলোও সমাধান হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় ভুল বুঝতে পেরে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় অনেক ভোটার ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ওই ভোটারদের থামিয়ে রাখতে পারবে না বুঝতে পেরেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও আমরা বিএনপিকে অভিনন্দন জানাতাম। বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় অনেক ভালো হয়েছে। বিএনপির কর্মকাণ্ডের জবাব দেবে দেশের জনগণ।

বেকায়দায় বিএনপি!

কেন্দ্র থেকে প্রচেষ্টা ও নির্দেশনা থাকলেও উপজেলা নির্বাচনে একক প্রার্থী নির্ধারণে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে তফসিল ঘোষিত প্রায় সব উপজেলাতেই দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীদের কোনোমতেই বাগে আনতে পারছেন না কেন্দ্রীয় নেতারা। যে কারণে প্রথম পর্বের ৯৭টি উপজেলার মধ্যে প্রায় সবগুলোতেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামাল দিতে দলটিকে ইতোমধ্যেই অর্ধশতের বেশি নেতাকে বহিষ্কার করতে হয়েছে।

প্রার্থী নির্ধারণে জটিলতা সম্পর্কে বিএনপির উপজেলা নির্বাচন মনিটরিং সেলের সদস্য, দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনকে পলিটিক্যাল স্ট্রাটেজি হিসেবে গ্রহণ করেছে বিএনপি। এই নির্বাচন সরকারের জন্য অ্যাসিড টেস্ট। নির্বাচন যদি মোটামুটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তাহলে প্রথম পর্বের ৯৭টি উপজেলার মধ্যে বিএনপি ও ১৯ দলীয় জোটের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন কমপক্ষে ৭০ থেকে ৭৫টিতে। অন্যদিকে সরকার যদি ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের অপচেষ্টা চালায়, তবে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বিএনপি তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

শাহজাহান বলেন, ‘জোটের শরিক জামায়াতকে ছাড় দেওয়ার কোনো বিষয় নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় নেতারাই তাদের প্রার্থিতা নির্ধারণ করেন। যেখানে যার বা যে দলের নেতার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে যে প্রার্থী বিজয়ী হয়ে আসবেন, সেখানে তাদেরই বা সেই দলের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিচ্ছে ১৯ দলীয় জোট।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচন, তাই দল বা কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেওয়ার আসলে কিছুই নেই। তবে স্থানীয় জোট নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ঐকমত্যের প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। প্রার্থী নির্ধারণে যেসব উপজেলায় বেশি জটিলতা, কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা সেখানে চেষ্টা করেছি জটিলতা নিরসনে। আশা করি দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে একাধিক বা বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না। তিনি বলেন, একাধিক বা বিদ্রোহী প্রার্থীদের অত্যন্ত ‘সফটভাবে’ বুঝিয়ে একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছি। যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বেশিরভাগই জেলা নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে।’

বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একক প্রার্থী নির্ধারণে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দলটি। অধিকাংশ উপজেলায় বিএনপির একাধিক এবং জোটের শরিক জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন। ফলে বিদ্রোহ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। মাঠ-রাজনীতিতে মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে বিএনপি ও দলটির অন্যতম জোট জামায়াত। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে পরস্পর-পরস্পরকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে হলেও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী ও প্রার্থীরা এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। একাধিক উপজেলায় কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা। মাঠ-নেতাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বিদ্রোহ দমনে কয়েক উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা সমস্যাই থেকে গেছে।

জানা গেছে, প্রথম পর্বের ৯৭টি উপজেলার মধ্যে জামায়াতকে ১৪টি উপজেলায় সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশে এ ছাড় দিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা বিএনপি। কিন্তু ওই ১৪টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্থানীয় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরা। দ্বিতীয় দফায় ১১৭ উপজেলা নির্বাচনে একাধিক জায়গায় দুই দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ দফায় ৫টিতে জামায়াতকে ছাড় দিয়েছে বিএনপি। তবে ২৮ উপজেলায় জামায়াত ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।

বগুড়ার শিবগঞ্জে জোটের সিদ্ধান্তে বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থন দেয় জামায়াত। কাহালুতে বিএনপি ছাড় না দেওয়ায় শিবগঞ্জে জামায়াত বিদ্রোহ করেছে। অপরদিকে সমঝোতার উদাহরণও রয়েছে। কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও রামুতে সমর্থন পাওয়ার শর্তে পেকুয়া, চকরিয়া ও মহেশখালীতে কোনো প্রার্থী দেয়নি জামায়াত।

বগুড়ার শাজাহানপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল, দিনাজপুরের বিরামপুর, বীরগঞ্জ, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কুড়িগ্রামের রাজীবপুর, জয়পুরহাট সদর, কালাই, নাটোরের সদর, গুরুদাসপুর, লালপুর, কুষ্টিয়ার খোকসা, নওগাঁর নিয়ামতপুর, সাপাহার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর, রাজশাহীর বাঘা, মেহেরপুরের গাংনী, ঝিনাইদহের মহেশপুর, বাগেরহাটের ফকিরহাট, খুলনার ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন।

অর্ধশত নেতা বহিষ্কার : বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৬ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুন্সী কামাল আজাদ পান্নুকে বহিষ্কার করে জেলা বিএনপি। একই দিন বহিষ্কৃত হন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম কে আজাদ ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এসএম রবিউল ফারুক। ৮ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোখলেছুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আবদুল মমিন, সদস্য আবদুল কাদের মাস্টার, মফিজুল ইসলাম ও পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হককে বহিষ্কার করা হয়। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া এবং জেলার প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় ১০ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা রফিকুর রহমানকে এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি ইমাম হাসান আবু চানকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ১১ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া বহিষ্কৃত হন। একই দিন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম শওকত সিরাজকে এবং মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় শহর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন খান স্বপনকে বহিষ্কার করা হয়। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় নাটোর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য সিরাজুল ইসলাম, গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আয়নাল হক তালুকদার ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আযমকে ১২ ফেব্রুয়ারি দল থেকে বহিষ্কার করে জেলা বিএনপি। একই দিন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় পাবনার চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম কালু, ভাঙ্গুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুর মোজাহিদ স্বপন ও সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন খানকে বহিষ্কার করে জেলা বিএনপি।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের স্বার্থবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত থাকার কারণে ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫ নেতাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বহিষ্কৃতরা হলেন- বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন খাঁন, বিএনপি নেতা নূর আলম এবং হান্নান শরীফ। সব মিলিয়ে অর্ধশতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, উপজেলা নির্বাচনের জয়-পরাজয়ের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি। উপজেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আন্দোলনের ধরন হবে এক রকম। অন্যদিকে না পেলে রাজপথের আন্দোলনের চিত্রও পাল্টে যাবে। উপজেলা নির্বাচনের জয় তৃণমূলের হতাশা ও সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটানোতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আন্তর্জাতিকভাবেও বিএনপির জনপ্রিয়তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। জিতলে তৃণমূলের চাঙ্গাভাব পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কাজে লাগবে।

১৫টিতে জয় পেতে মরিয়া জামায়াত

মানবতাবিরোধী অপরাধসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক মাঠে কোণঠাসা জামায়াতে ইসলামী আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চমক দেখাতে চায়। দলের চরম ক্রান্তিকালে উপজেলা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে তারা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য প্রথম দফার নির্বাচনে ২৮টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জামায়াত। এর মধ্যে ২০টিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলে কমপক্ষে ১৫টিতে জয় পেতে চায় দলটি।

একইভাবে ২৬টিতে ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১২টিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে ১৪টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে তাদের। বাকিগুলোতে বিএনপি ও জামায়াত আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচন করছে।

জামায়াতের নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে। তবে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পাশাপাশি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও জোটের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই করতে হবে জামায়াত প্রার্থীদের।

জামায়াত সূত্র জানায়, নির্বাচনে কমপক্ষে ১৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ১৭টিতে ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৮-১০টিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠে নেমেছে জামায়াত। এ জন্য কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলার নেতাদের নিয়ে একাধিক সেল গঠন করেছে দলটি। দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বিএনপির সঙ্গে সমন্বয়সহ বিভিন্ন কৌশলে কাজ করছে তারা।

যে ১৪টিতে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা হয়েছে সে সব উপজেলার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী এখনও মাঠে রয়েছেন। যেসব উপজেলায় প্রার্থী দেওয়া হয়েছে সেখানে স্থানীয়ভাবে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে দাবি জামায়াতের। এ সবের মধ্যে ৮-১০টিতে জামায়াত সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান রয়েছেন।

কুষ্টিয়ার তিনটি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। এখানে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নীলফামারীতে তিনটি উপজেলার মধ্যে ডিমলা উপজেলায় জামায়াত প্রার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। সেখানে নির্বাচন করছেন মাওলানা আব্দুস সাত্তার। এ ছাড়া জলঢাকা উপজেলাতে জামায়াতের স্থানীয় নেতা মো. সৈয়দ আলী নির্বাচন করছেন। এখানে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীও রয়েছেন।

পঞ্চগড়ের ৪টি উপজেলার মধ্যে তিনটিতেই প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল খালেক, দেবীগঞ্জে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান এবং বোদা উপজেলায় মো. শফিউল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে অধ্যাপক আজিজুর রহমান, রংপুরের মিঠাপুকুরে অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ওলিউর রহমান, কোটচাঁদপুর উপজেলায় তাজুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, রাজশাহীর মোহনপুরে ইসমাইল হোসেন, নাটোরের সিংড়ায় বেলাল উজ্জামান, সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মুর্তজা আলী, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, পাবনার সাঁথিয়ায় মোখলেছুর রহমান, আটঘরিয়ায় মাওলানা জহুরুল ইসলাম, খুলনার কয়রা উপজেলায় আ খ ম তমিজ উদ্দিন, নরসিংদীর পলাশে মাওলানা হেলাল উদ্দীন, শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে মাওলানা নাসির হোসেন, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ছাতকে রেজাউল করিম, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় প্রকৌশলী আলকাছ আল মামুন, সিলেটের জৈন্তাপুরে জয়নাল আবেদীন, গোয়াইনঘাটে আনোয়ার হোসেন, জকিগঞ্জে নিজাম উদ্দিন খান, বিশ্বনাথে নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী ও গোলাপগঞ্জে হাফেজ নাজমুল ইসলাম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সিরাজগঞ্জের চারটি উপজেলার মধ্যে তিনটিতেই প্রার্থী রয়েছে জামায়াতের। তিনটির কোনোটিতেও বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা হয়নি। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, উল্লাপাড়া উপজেলায় অ্যাডভোকেট জাহিদ হাসান মিন্টু এবং রায়গঞ্জ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুস সাত্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত বগুড়ার ছয়টি উপজেলার মধ্যে তিনটিতে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল গণি মণ্ডল, নন্দিগ্রামে নুরুল ইসলাম মণ্ডল ও শেরপুরে দবির উদ্দিন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলনা শাহীনুর ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সমঝোতার ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে তেমন আগ্রহ দেখানো হয়নি। তারা শুধু সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্যাপারে আলোচনা করতে চেয়েছে। বাকিগুলোর ব্যাপারে কোনো সমঝোতার চেষ্টা করেনি।’ এতে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে তিনটিতে আমরা প্রার্থী দিয়েছি, সেখানে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে। আশা করছি ভালো ফলাফল পাব।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের এক সদস্য বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে ছাড় দিয়েছি। তাদেরও তো আমাদের কিছুটা ছাড় দেওয়া উচিত। এ ছাড়া গত ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারির উপজেলা নির্বাচনেও তো এককভাবেই জামায়াত সমর্থিত ৪০টির মতো চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছিল। বিএনপির সঙ্গে আলোচনা চলছে, দেখা যাক কী হয়।’

২০০ নটিক্যাল মাইল

নিয়ন্ত্রণে আসেনি সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইল

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ‘অন ল অব দ্য সি’র সমুদ্রসীমা নির্ধারণী রায়ে সমুদ্রের জলসীমায় বিশাল অংশ দেশের আওতাভুক্ত হলেও পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেই কোস্টগার্ডের। এমনকি জনবল এবং অবকাঠামোগত সুবিধার অভাবে গভীর সমুদ্র এলাকায় কোস্টগার্ড প্রবেশই করতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ডের প্রশিক্ষণ দেবে ও আধুনিকায়ন করবে এ আশায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও জানা গেছে।

কোস্টগার্ড সদর দফতর সূত্র জানায়, ওই রায়ে বেস লাইন বা উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল ‘একান্ত অর্থনৈতিক এলাকা’ এবং ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বর্ধিত ‘মহীসোপান’ এলাকা কোস্টগার্ডের আওতায় আসার কথা থাকলেও দুই বছরেও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি তারা।

সূত্র জানায়, ওই রায় অনুযায়ী সমুদ্র এলাকার ১ লাখ ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হওয়ার কথা।

কিন্তু ২০১২ সালের ১৪ মার্চ ঘোষিত রায়ের প্রায় দুই বছর পরও ওই এলাকার অপরাধ দমন এবং সম্পদ সংরক্ষণ তো দূরের কথা, মহীসোপান এলাকায় কোস্টগার্ড যেতেই পারছে না। মূলত জনবল এবং আধুনিক জলযানের অভাবে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ গভীর সমুদ্র এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারছে না কোস্টগার্ড। আর এ কারণেই গভীর সমুদ্র এলাকার সম্পদ সংরক্ষণ ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

জানা যায়, বিশাল উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তার জন্য কোস্টগার্ড সদস্য মাত্র দুই হাজার। অথচ এ সব এলাকায় প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। আর এর অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় দেড় কোটি মানুষই মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সেই হিসেবে আনুপাতিক হারে প্রায় সাড়ে সাত হাজার জেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে মাত্র একজন কোস্টগার্ড সদস্য।

শুধু জনবলই নয়, নেই অবকাঠামোগত সুবিধা এবং সমুদ্র গমনের জন্য প্রয়োজনীয় জাহাজ ও বোট। সুন্দরবনের নদ-নদীসহ জলভাগের ১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার টহলের জন্য ৩৪টি বিভিন্ন আকারের বোট রয়েছে। এমনকি সমুদ্র তীরবর্তী ৭১০ কিলোমিটার এবং উপকূলসংলগ্ন প্রায় ৩৪ হাজার বর্গকিলোমিটার টহলের জন্য রয়েছে মাত্র ১২টি জাহাজ। এর মধ্যে আবার অধিকাংশই পুরাতন, ছোট ও ধীরগতির কারণে সমুদ্রে গমনে অনুপযোগী।

এ কারণেই সর্বক্ষণিক নজরদারি, চোরাচালান প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা, জীবন ও জলযানের নিরাপত্তা প্রদান করতে পারছে না কোস্টগার্ড। এ ছাড়া উদ্ধারকার্য পরিচালনা, সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধ ও সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।

এ সব কারণেই রোধ করা যাচ্ছে না চোরাচালান, মানবপাচার, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ। এর বাইরে উপকূলীয় এলাকার বনজ সম্পদ, সমুদ্রের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

কোস্টগার্ড সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে পরিমাণ অপরাধী ধরা হচ্ছে তার চেয়ে কয়েক গুণ অপরাধী এখনও সক্রিয় আছে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের ধরা যাচ্ছে না। এমনকি বাংলাদেশের সমুদ্র পথকে অপরাধীরা নিরাপদ জোন হিসেবেই মনে করে। সরকারের পক্ষ থেকে এ সব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি ওই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোস্টগার্ড শক্তিশালী করারও উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার।

সূত্র জানায়, ভারত এবং মিয়ানমার থেকে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র নৌপথে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। অস্ত্র ও মাদক আমদানির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে নৌপথকে।

জানা গেছে, কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী বাহিনীতে রূপান্তরিত করতে তিনটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এর কোনো অগ্রগতি নেই। কোস্টগার্ডকে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের সহযোগিতা করবে এ আশায় অবহেলিতই থেকে গেছে এই বাহিনী।

দেশের ১৯টি উপকূলীয় জেলার নদীপথ ও সমুদ্র এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নেই। এ সব এলাকার নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণের দায়িত্ব বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের। কিন্তু এ বাহিনী কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। সরকারের অবহেলার কারণে অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উপ-পরিচালক (ইনটেলিজেন্স) বজলুল রশীদ বলেন, কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও কোস্টগার্ড এগিয়ে যাচ্ছে। কোস্টগার্ডের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অপরাধ দমন এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনবল বাড়ানো, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক জলযানের বিষয়ে প্রস্তাবগুলো করা হয়। কিন্তু এ সব প্রস্তাব এখনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এগুলো বাস্তবায়ন হলে সমস্যা কেটে যাবে।

তিনি আরও জানান, আমেরিকা কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে এগিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। আশা করছি সীমাবদ্ধতাগুলো পর্যায়ক্রমে কেটে যাবে। এতে রক্ষিত হবে সমুদ্রের নিরাপত্তাও।

যেভাবে প্রচারিত হয় কথিত অডিও বার্তা

বহুল আলোচিত আন্তর্জাতিক ‘জঙ্গি’ সংগঠন আল কায়েদার কথিত অডিও বার্তাটি কীভাবে প্রচারিত হয় এবং এর উৎস কী তা নির্ণয় করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে র‌্যাব। রাসেল বিন সাত্তার নামে এক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র বাংলাদেশে এটি প্রচার করে যা পরবর্তী সময়ে মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় বলেও র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

র‌্যাবের দাবি, ‘বাংলাদেশ ম্যাসাকার বিহাউন্ড এ ওয়াল অব সাইলেন্স’নামে অডিও বার্তাটি প্রথমে প্রকাশিত হয় গত বছরের ৬ নভেম্বর ৬টা ৩০ মিনিটে 'dawahilallah.wordpress.com’ নামে একটি সাইটে। পেজটি মূলত পরিচালিত হয় ‘বালাকোট মিডিয়ার’ পক্ষ থেকে। এটি পাকিস্তানভিত্তিক একটি সংগঠন। এ মিডিয়া প্রায় নিয়মিত ভাবেই বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে জিহাদের ডাক দিয়ে থাকে। এ পেজে ‘আল কায়েদা’ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিসহ আরও অনেক আধ্যাতিক নেতাদের নামে বাণী প্রচার করা হয়।

‘বালাকোট মিডিয়ার’ সাইটে আপলোড করার সঙ্গে সঙ্গেই এটি রাসেলের ব্যক্তিগত ই-মেইল এর লিংক চলে আসে।

র‌্যাবের দাবি, রাসেলের সঙ্গে এ সাইটের লিংক অ্যাড করা আছে। ওখানে যা আপলোড করা হয় তখনই এটি রাসেলের মেইলে চলে আসে।

এরপর আল কায়েদার ওই অডিও ক্লিপটি পরবর্তী সময়ে 'jihadology.net’ এ বছরের ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়।

এর আগে এ অডিও ক্লিপটি রাসেল তার নিজস্ব সাইটে 'islamrealo.wardpress.com’ ৮ ফেব্রুয়ারি ‘সাইলেন্ট জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ’নামে প্রচার করে।

এ ছাড়া রাসেল এ অডিওটি বিভিন্ন পেসবুক পেজেও প্রচার করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। আর এর মাধ্যমেই এটি বাংলাদেশে ব্যাপক প্রচার পায়।

র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগাল উইংয়ের পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রাসেল টাঙ্গাইলের একটি টেক্সটাইল ইনিস্টিটিউটের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র এবং একজন দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ। তিনি ফেসবুক এবং কয়েকটি ওয়েব সাইটের অ্যাডমিন। তার নিয়ন্ত্রিত এসব সাইট এবং পেজে তিনি এর আগেও বিভিন্ন উগ্র মতবাদ এবং বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালাতেন।

তিনি আরও জানান, রাসেল তার তৈরিকৃত ফেসবুক পেজ ‘আমার দেশ ভাবনা’, ‘বাশের কেল্লা ভার্সন-২’, ‘দৃষ্টিভঙ্গি’, ‘গণতন্ত্র নিপাত যাক’, ‘ব্লগার রাসেল ’ ইত্যাদি পেজে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী আর্টিকেল এবং ছবি আপলোড করে আসছে। এমনকি গত বছর ৫ মে হেফাজতের ঘটনার পর ৭ মে তিনি তার নিজস্ব ই মেইল আইডি 'krasel173@yahoo.com’ থেকে ইরানের পেসিডেন্টের মেইলে 'mass killing on protesters in Dhaka at night by armed joint force at least killed thousands.’.’ শিরোনামে মেইল করেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মো. রাসেল বিন সাত্তার দেশবিরোধী বিভিন্ন প্রচারের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি তিনি উগ্র ইসলামী চেতনা ধারণ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উগ্র মতবাদ প্রচার করেন। তার কর্মকাণ্ড গবেষণায় এটি ধারণা করা যায় যে, তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং এ সব জঙ্গি সংগঠনের এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়েছেন।

রাসেল যা বললেন

তবে আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন রাসেল। তিনি বলেন, ‘আমি ইসলামের প্রতি দুর্বল। কিন্তু আমি কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নই। যেখানেই আমি ইসলামের বিষয়ে কিছু পাই আমি ডাউনলোড করি। আর আমি বিভিন্ন পেজের অ্যাডমিন, কিন্তু আমি কোনো জিহাদী প্রচার চালাই না। তবে ইসলামী অডিও এবং ভিডিও প্রচার করি।’

রাসেল আরও বলেন, ‘আমি এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ফেসবুক ব্যবহার করি। ছোট খাট ব্লগিং করি শখের বশে। আর ইসলামের কিছু পেলেই আমি তা আপলোডও করি। আমি ওয়াজে শুনেছি মোবাইলে গান, ভিডিও রাখা ‘ফিৎনা’। তাই আমি সব সময় ইসলামী অডিও ভিডিও রাখতাম।’

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে বাধা নেই


মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ রায় দেন। এর ফলে আগামীকাল বুধবার এই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী খোন্দকার আবু আনসার নাজাদ একটি রিট দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গতকাল সোমবার ওই উপজেলার নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হুমায়ূন নূর রশিদ মুহিত চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। তাঁর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবে আলম ও একরামুল হক।

একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হুমায়ুন নূর রশিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে কাল নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা নেই।
রিট আবেদনকারীর কৌঁসুলি শ ম রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ চেম্বার বিচারপতি চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন।

রিট আবেদনকারী খোন্দকার আবু আনসার নাজাদ আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের (ইউপি) সঙ্গে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের (ইউপি) সীমানা নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। শ্রীপুরের নাকোল ইউনিয়নের অধিবাসী হয়েও অনেকেই সেখানকার ভোটাধিকার পাননি। তাঁদের মধুখালীর আড়পাড়ার ভোটার করা হয়েছে। এ কারণে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনস্বার্থে হাইকোর্টে ওই রিট আবেদনটি করেছিলাম।’

উপজেলার প্রথম ধাপের নির্বাচন আজ

পঞ্চম ধাপের ভোট ৩১ মার্চ: তফসিল কাল

অবশেষে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের ভোট আজ। প্রথম ধাপে ৯৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে ১০২টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয় ১৯ জানুয়ারি। এর মধ্যে সীমানা জটিলতার কারণে রংপুর সদর, পীরগাছা, গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া পীরগঞ্জ উপজেলার ভোট গ্রহণের দিন ২৪ ফেব্রæয়ারি। যে কারণে ৯৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে ৮১ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার এ তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
সূত্র জানায়, পঞ্চম ধাপের এ নির্বাচনের সম্ভাব্য ভোটগ্রহণের তারিখ ৩১ মার্চ সোমবার এবং মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২ মার্চ, যাচাই-বাছাই ৫ মার্চ ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৩ মার্চ। ইতোমধ্যে এ ধাপের তফসিল দেয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে ইসি। তবে আজ প্রথম ধাপের ৯৬ আসনে নির্বাচনের কারণে তফসিল ঘোষণা করা হবে না।
প্রথম ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট : খাগড়াছড়ি সদর, রামগড়, পানছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও মহালছড়ি, ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা, ভোলার লালমোহন, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, শিবালয়, সিঙ্গাইর, সাটুরিয়া, গাজীপুরের কাপাসিয়া, রাজবাড়ীর পাংশা, পঞ্চগড়ের সদর, বোদা, অটোয়ারী, দেবীগঞ্জ, কাহারোল, খানসামা, রংপুরের তারাগঞ্জ ও মিঠাপুকুর, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারি, উলিপুর, ফুলবাড়ি, গাইবান্ধার সাঘাটা, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর, ধুনট ও নন্দীগ্রাম, দুপচাচিয়া, সোনতলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, মেহেরপুর সদর, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও সদর, নড়াইলের কালিয়া, জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ি, সদর ও বালিয়কান্দি, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী, মকসুদপুর, মাদারীপুরের কালকিনি, শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ ও ডামুড্যা, জাজিরা, গোসাইর হাট, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, দক্ষিন সুনামগঞ্জ, ছাতক, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, হবিগঞ্জের মাধবপুর, নীলফামারির ডিমলা, সৈয়দপুর ও জলঢাকা, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, নওঁগার মহাদেবপুর, রানীনগর, পাবনার সাথিয়া, আটঘড়িয়া, সুজানগর, যশোরের অভয়নগর, মাগুরা সদর, শ্রীপুর, বরিশালের বাকেরগঞ্জ, গৌরনদী, নেত্রকোনার দূর্গাপুর, কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, নিকলী, করিমগঞ্জ, ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ, নরসিংদীর পলাশ, বেলাবো, সিলেটের বিশ্বনাথ, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনহাট, জৈন্তাপুর, হবিগঞ্জের বাহুবল, চট্টগ্রামের হাটহাজারি, মীরেশ্বরাই, সাতক্ষীরার আশাশুনি, রাজশাহীর মোহনপুর, খুলনার দিঘলীয়া, কয়রা।
পঞ্চম ধাপে যেসব উপজেলার তফসিল ঘোষণা হবে সেগুলো হল- ঠাকুরগাঁও জেলার সদর, দিনাজপুর জেলার বিরল, পাবতীপুর ও হাকিমপুর, নীলফামারী জেলার ডোমার, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ। বগুড়া জেলার বগুড়া সদর, রাজশাহী জেলার পবা, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি ও শাহজাদপুর।
পাবনা জেলার পাবনা সদর ও বেড়া, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা ও চুয়াডাঙ্গা সদর, সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও তালা, বরগুনা জেলার বামনা, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর ও আমতলী, পটুয়াখালী জেলার দশমিনা ও কলাপাড়া, টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর ও বাসাইল, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও, ত্রিশাল ও নান্দাইল।
কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম ও পাকুন্দিয়া, মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী, সিরাজদিখান ও লৌহজং, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ, নরসিংদী জেলার মনোহরদী, নরসিংদী সদর ও রায়পুরা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ।
সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর, সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী ও রাজনগর, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার কসবা, আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর ও চান্দিনা।
ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া, লক্ষীপুর জেলার রামগতি, লক্ষীপুর সদর, রামগঞ্জ ও রায়পুর, চট্টগ্রাম জেলার স›দ্বীপ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, টেকনাফ ও উখিয়া, খাগড়াছড়ি জেলার দিঘিনালা, রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, লংগদু, রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি।
মাঠে সেনা, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃক্সখলা বাহিনী : অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম ধাপের নির্বাচন শেষ করতে মাঠে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের পরবর্তী দুইদিন পর্যন্ত তারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। আইনশৃক্সখলা র¶াকারী বাহিনীর সহায়তায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছেন তারা। প্রতি উপজেলায় ১ প্লাটুন করে সেনাবাহিনীর সদস্য টহল শুরু করেছেন। বড় উপজেলায় এ সংখ্যা আরো বেশি। পাশাপাশি প্রতি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুই থেকে তিনটি গাড়ি থাকবে। সঙ্গে সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ও একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। এছাড়া মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণ র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬ জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রামপুলিশ একজন করে আইনশৃক্সখলার দায়িত্বে থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র, পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর এলাকায় এ সংখ্যা শুধুমাত্র পুলিশের ¶েত্রে দু’জন হবে। নির্বাচনে আইনশৃক্সখলা র¶ার্থে ৩৮৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯৭ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন : নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও ইসি কর্মকর্তাদের সমš^য়ে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করেছে ইসি। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন এ সেল কাজ করবে।
জানা গেছে, নির্বাচন পূর্ব , নির্বাচনের দিন ও পরবর্তী অনিয়ম নিয়ে কাজ করবে এ সেল। এছাড়া এলাকার শান্তি-শৃক্সখলা রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক  মনিটরিং করবে এ সেল।
উল্লেখ্য, প্রথম দফায় ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ২৫ জানুয়ারি, তা যাচাই-বাছাই হয় ২৭ জানুয়ারি এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ৩ ফেব্রæয়ারি। এ ছাড়া দ্বিতীয় দফায় ১১৬ উপজেলায় ২৭ ফেব্রæয়ারি, তৃতীয় দফায় ৮৩ উপজেলায় ১৫ মার্চ এবং চতুর্থ ধাপে ৪২  জেলায় ৯২টি উপজেলায় ভোট হবে ২৩ মার্চ। এর আগে উপজেলা নির্বাচনকে একধাপ কমিয়ে ৫ ধাপে করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

প্রার্থী আয়কর খেলাপি তবুও বৈধ মনোনয়নপত্র !

ঋণখেলাপী হওয়ার পরেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতা বহাল রয়েছে ব্রা¶নবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো: সফিকুল ইসলামের। উপজেলা পরিষদ নীতিমালা লক্সঘন করে সংশি­ষ্ট রিটার্নিং অফিসার তার প্রার্থীতা বহাল রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  নির্বাচন কমিশন সংশি­ষ্ট সূত্রটি গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, গত ৬ ফেব্র“য়ারী দেশের ৮৩টি উপজেলার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মার্চ এসব উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ১৫ ফেব্র“য়ারি, যাচাই-বাছাই ১৭ ফেব্র“য়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৪ ফেব্র“য়ারি নির্ধারণ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী নবীনগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১২, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করে। প্রার্থীদের আবেদন যাচাই বাছাই শেষে ১ জন বাদে ২৭জনকেই বৈধ প্রার্থী ঘোষণা দেন জেলা রির্টানিং অফিসার। বাতিলকৃত ১জন বিষয়টি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থীতা ফিরে পান। যাচাই বাছাই চলাকালীন সময়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী এর নামে উপকর কমিশনারের কার্যালয় থেকে সহকারী কর কমিশনার সৈয়দ নূর“ল হুদা ¯^া¶রিত আয়কর পরিশোধ করেনাই মর্মে ফ্যাক্সবার্তায় জানানো হয়।
ঐ ফ্যাক্সবার্তা অনুযায়ী তার ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫শত ৪ টাকা কর খেলাপি তিনি। আইন অনুযায়ী কোনও কর খেলাপি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেনা। কর কমিশনের এই ফ্যাক্স বার্তা উপে¶া করেই তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন সংশি­ষ্ট রির্টানিং অফিসার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো: সফিকুল ইসলাম বলেন, আমি অনেকদিন আগে প্রতিষ্ঠানটির সাথে জড়িত ছিলাম। আয়কর খেলাপির বিষয়টি আমি জানিনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, যাচাই বাছাইয়ের দিন রাতে আমি ফ্যাক্সটি পেয়েছি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে দু’দল

তৃতীয় ধাপেও বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি

দেশের প্রধান বড় দুই রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ির কারণে নিরঙ্কুশ বিজয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিপাকে পড়েছে। বিদ্রোহীদের দল থেকে বহিষ্কার করেও ফল পাচ্ছেন না তারা। প্রায় অর্ধেকের বেশি আসনেই এবার বিদ্রোহী প্রার্থীরা সরব থাকায় ত্রিমুখি প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ফলে এককভাবে কোনো দলের বিজয় অর্জন করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।
ইতোমধ্যে উপজেলার প্রথম ও দ্বিতীয় দফার পর এবার তৃতীয় দফাতেও দুই দলের একক প্রার্থী দিয়ে প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে অরাজনৈতিক বলা হলেও ভোটের মাঠে প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয়ই বড় করে দেখা হয়। তাই উপজেলা নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে উভয় দলের শীর্ষ পর্যায় থেকেই নির্দেশনা জারি করা হয়। বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়ে কিছু যায়গায় বহিষ্কারও করেছে আওয়ামী লীগ। তবে এতে প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের এমপি ও তৃণমূলের নেতাদের মতপার্থক্যের কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী বেড়ে গেছে। যার ফলে একক প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে দলের শত চেষ্টাও কাজে আসেনি। বিএনপির পক্ষ থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেয়া না হলেও জামায়াতের সঙ্গে জোট থাকায় অনেক উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীদের ছাড় দিতে হচ্ছে। তবে জামায়াত এ নির্দেশ মানলেও বিএনপির স্থানীয় নেতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মানছেন না।
সূত্র জানায়, এদিকে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ঘোষিত তফসিল অনুসারে সারাদেশের ৮৩ উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দেড় সহস্রাধিক প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। শনিবার তৃতীয় ধাপের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে তিন পদেই উৎসব মুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। এতেও আগের মতো বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, এর আগে দ্বিতীয় ধাপের ১১৭টি উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অংশ নেন ১ হাজার ৩৬৭জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৪০ জন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন মোট ৪১১জন। অন্যদিকে প্রথম ধাপের ৯৮ উপজেলার নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ২৭৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৩২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩২৯ জন। তবে এ দফায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন ৪০৫ প্রার্থী। প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের ৫২ ও বিএনপির ৪৫ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অনেক অংশ নিলেও মূলত লড়াই হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে। যার কারণে দু’দলই উপজেলা নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে গত জাতীয় নির্বাচন একতরফা হওয়ায় তৃণমূলে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের লড়াইয়ে দুই দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা নির্বাচন। ফলে কেন্দ্র থেকে নিজ দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উভয় দল। কিন্তু এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে  দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী। শত চেষ্টা করেও একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে পারছেন না তারা।
জানা গেছে, গত সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী বিজয়ী করতে মাঠে নেমেছে বিএনপি। দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এনির্বাচনকে ইস্যু মনে করছেন তারা। এ জন্য দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সবরকম চেষ্টাই তারা করছেন।
জানা গেছে, যে সব উপজেলায় উভয় দলের একক প্রার্থী রয়েছেন সে সব উপজেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আবার যে সব উপজেলায় দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন সেখানে তাদের জন্য নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। একাধিক প্রার্থীদের কারণে দলীয় ভোট ভাগাভাগির কারণে তাদের দলীয় প্রার্থীর বিজয়ী হওয়াটা বেশ সমস্যা হবে বলে জানা গেছে।
প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী পাংশা উপজেলায় আওয়ামী লীগ অনেকটাই বিপাকে রয়েছে। এ উপজেলায় তাদের একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির রয়েছে একক প্রার্থী। তাই এখানে বিএনপি কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
এছাড়া কুষ্টিায়ার সদর ও ভেড়ামারা উপজেলায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। অপরদিকে একাধিক প্রার্থী থাকায় সঙ্কটে রয়েছে বিএনপি।
জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি দেশের ৪৮৭টির উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১০২টির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। যার মধ্যে সীমানা জটিলতার কারণে রংপুর জেলার ৪টি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এগুলো হলো-রংপুর সদর,কাউনিয়া,গঙ্গাচরা ও পীরগাছা। এ দফার ৯৭টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বুধবার। আর পীরগঞ্জের নির্বাচন হবে ২৪ ফেব্রæয়ারি। গত ২৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ১১৭টি উপজেলার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ১১৬ উপজেলায় ২৭ ফেব্রæয়ারি আর কক্সবাজার জেলার মহেশপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ১ মার্চ। এছাড়াও গত ৬ ফেব্রæয়ারি ঘোষিত তৃতীয় ধাপের ৮৩টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৫ মার্চ। নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই হবে আগামীকাল সোমবার। আগামী ২৩ মার্চ চতুর্থ ধাপে এবং ৩১ মার্চ পঞ্চম এবং শেষ ধাপে উপজেলা নির্বাচন শেষ হবে। উল্লেখ্য, এর আগে দেড় যুগ পর ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি একদিনে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ১৯৮৫ সালে প্রথম এবং ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।