শনিবার, ৮ জুন, ২০১৩

তিন দফা দাবিতে ছাত্রদলের বিদ্রোহী গ্রুপের আল্টিমেটাম

তিন দফা দাবিতে ছাত্রদলের বিদ্রোহী গ্রুপের আল্টিমেটাম

ঢাকা: আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন, কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন করে বিঞ্চিতদের যথাযথ মূল্যায়ন ও কমিটিতে অবমূল্যায়িত নেতাদের পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্রদলের বিদ্রোহী গ্রুপ।

শনিবার  বেলা ১১ টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স (ক্র্যাব) অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান এ আল্টিমেটাম দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদলের ২৯১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১৬৯ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের। এরমধ্যে বিতর্কিত ব্যক্তিরাও আছেন। তাছাড়া অর্থের বিনিময়ে অছাত্র, প্রবাসী, চাকরিজীবী এবং নেতাদের আত্মীয় স্বজনকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ও পদবি দেয়া হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যোগ্য ছাত্রনেতারা কমিটিতে বাদ পড়লেও অর্থের বিনিময়ে পদ পেয়েছেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাস ও শ্রমিক দলের নেতারা। যুগ্ম সম্পাদক আকরামুল হাসান মোটা অংকের আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে সাভার পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদিকে দেয়া হয়েছে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদ।

তিনি বলেন,, আশুলিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আইয়ুব খান কে দেয়া হয়েছে সহ সাংগঠনিক পদ। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপক কুমার বর্মন প্রিন্সকে দেয়া হয়েছে সহ সাংগঠনিক পদ। জাসাস এর এক জেলা সভাপতি আমজাদ হোসেন মুন্নাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে ইতালি প্রবাসী গোলাম মোর্শেদ রাসেলকে সদস্য পদ দেয়া হয়েছে।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, টাকার বিনিময়ে কেরানীগঞ্জ থানার কলাতিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ সভাপতি জিয়াউর রহমান সেভনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ নাট্য সম্পাদক দেয়া হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব আহসানের গাড়ীর ড্রাইভার হওয়ায় জসিম উদ্দিনকে সহ সাংগঠনিক পদ দেয়া হয়েছে। সহ সভাপতি এবিএম পারভেজ রেজার বাসার কাজের ছেলে খন্দকার মোজাহিদুল ইসলামকে করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক।

তিনি বলেন, কমিটিতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ৭০জনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। ৩১তম বিসিএস এর শিক্ষা ক্যাডার আদনান আলম বাবুকে সহ স্কুল বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। মাইটিভির ব্যুরো চিপ সোয়েব খন্দকারকে  সহ সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কাঁচপুর সিনহা গার্মেন্টস এ কর্মরত আবদুল হান্নান মিয়াকে সহ সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। ঢাকা ব্যাংকে কর্মরত ওমর ফারুক ডালিমকে সহ সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাহবুবুর রহমান পলাশকে সহ সাংগঠনিক করা হয়েছে স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরকে সহ সাংগঠনিক করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা বায়েজিদ আরেফিনকে আন্তর্জাতিক সম্পাদক করা হয়েছে। শিশির গ্রুপে কর্মরত মিজানুর রহমানকে যোগাযোগ সম্পাদক, রাজধানীর নবাবপুর রোডে ভাংগারি দোকানদার খোরশেদ আলমকে সদস্য পদ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সভাপতি এক এগারোর বেঈমানদের পদ পদবী দেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ভাংচুর করেও পদবি পেছেন। তারেক রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর মধুর কেন্টিনে যার নেতৃত্বে মিষ্টি বিতরণ করার পরেও আন্তর্জাতিক সম্পাদক বায়েজিদ আরেফিনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিগত কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (রয়েল), সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আদেল মোহাম্মদ (জুয়েল), জাকির হোসেন, এম, আর, চৌধুরী মিল্টন, ক্রীড়া সম্পাদক আহসানুল হক রুবেল, অর্থ সম্পাদক আমজাদ হোসেন (জুয়েল), সমাজ সেবা সম্পাদক মাহবুবুল আজম, আপ্যায়ন সম্পাদক রুহুল ইসলাম (মনি), সহ প্রচার সম্পাদক জসিম উদ্দিন খান, সদস্য গোলাম আজম সৈকত, মাহফুজুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন (চয়ন), সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।