ঢাবি এলাকায় সাবলেট সমস্যা
আবাসিক এলাকাগুলোতে বিজ্ঞাপন দিয়ে সাবলেট দেওয়া হয়
লিংকন মাহমুদ, ঢাবি প্রতিনিধি
নিরিবিলি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার সুনাম আছে। কিন্তু এখানেও অপচয় হচ্ছে গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের। বিনষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন বাসা ভাড়া দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। কিছু বাসা মেস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রত্যেক ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে বছর শেষে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্তরা। অন্যদিকে অনেক শিক্ষক আবাসন সংকটে বাসা বরাদ্দ পাচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় রুম ভাড়া দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও বরাদ্দপ্রাপ্তরা ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির অপচয় হচ্ছে। এতে আবাসিক এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।
এস্টেট অফিস থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রায় ১৩শ' বাসা রয়েছে। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর ও দক্ষিণ নীলক্ষেত, শিববাড়ী এবং আজিমপুরে অবস্থিত। এছাড়া কয়েকটি হলে কর্মচারীদের জন্য ব্যাচেলর কোয়ার্টার রয়েছে। শিক্ষকদের সমমানের সিনিয়র কর্মকর্তারা বাসা পেয়ে থাকেন। নিজেদের আত্মমর্যাদার কারণে কর্মকর্তারা কম বাসা ভাড়া দেন। তবে অধিকাংশ কর্মচারী তাদের বাসা ভাড়া দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন। প্রতি বছর বাসা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ পেলে তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হয়। কয়েকজন কর্মচারীর বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সেই শাস্তি আমলে নিচ্ছেন না কর্মচারীরা। তারা বাসা ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
জানা গেছে, ঢাকা নগরীতে প্রকট আবাসন সংকটকে পুঁজি করে কোনো কোনো বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্তরা মেস বানিয়ে ভাড়া দেন। এসব মেসে বেশিরভাগই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের ছাত্রী বা কর্মজীবী নারীরা থাকেন। ঢাবির প্রথম বর্ষের ছাত্রী, যারা হলে সিট পাচ্ছেন না, তারাও উচ্চহারে ভাড়া দিয়ে থাকতে
বাধ্য হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসাগুলো সবচেয়ে বেশি সাবলেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার অনেক বাসায় নীলক্ষেতের দোকানিরা বেশি টাকায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া নিয়ে থাকছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর নীলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ১০৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ফ্ল্যাটে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছেন। কিছু কিছু বাসার বরাদ্দপ্রাপ্ত মালিকরা পুরো ফ্ল্যাটই ভাড়া দিয়ে নিজেরা পরিবারসহ বারান্দায় থাকছেন। এতে করে মাস শেষে তারা একটা মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন। ভাড়াটিয়াদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও গ্যাসের অপচয় হচ্ছে প্রতিদিনই। কোনো কোনো বাড়ির মালিক ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ির ভেতর ও বাইরের কাঠামো নষ্ট করে ফেলেছেন। কেউ কেউ বারান্দা টিন দিয়ে ঘিরে বিল্ডিংয়ের সৌন্দর্য নষ্ট করেছেন। কোনো রুমে ৭-৮টি চৌকি ফেলে মেস বানিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি ১৮শ' থেকে দুই হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার একটি রুম ভাড়া দেওয়ার জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অ্যাডভান্স নেওয়া হচ্ছে।
বাসা বরাদ্দেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এই আবাসিক এলাকায় প্রায় সব ফ্ল্যাট মালিকই একাধিক রুম ভাড়া দিয়ে বছর শেষে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক বাসা সাবলেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। এসব কারণে গত বছর বেশকিছু বাসার বরাদ্দ বাতিল করা হয়। অভিযুক্ত কয়েকজনের বেতনও বন্ধ রাখা হয়েছিল। কেউ বাসাকে সাবলেট দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবারও বাসা ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এগুলো খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।
আবাসিক এলাকাগুলোতে বিজ্ঞাপন দিয়ে সাবলেট দেওয়া হয়
লিংকন মাহমুদ, ঢাবি প্রতিনিধি
নিরিবিলি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার সুনাম আছে। কিন্তু এখানেও অপচয় হচ্ছে গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের। বিনষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন বাসা ভাড়া দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। কিছু বাসা মেস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রত্যেক ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে বছর শেষে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্তরা। অন্যদিকে অনেক শিক্ষক আবাসন সংকটে বাসা বরাদ্দ পাচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় রুম ভাড়া দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও বরাদ্দপ্রাপ্তরা ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির অপচয় হচ্ছে। এতে আবাসিক এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।
এস্টেট অফিস থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রায় ১৩শ' বাসা রয়েছে। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর ও দক্ষিণ নীলক্ষেত, শিববাড়ী এবং আজিমপুরে অবস্থিত। এছাড়া কয়েকটি হলে কর্মচারীদের জন্য ব্যাচেলর কোয়ার্টার রয়েছে। শিক্ষকদের সমমানের সিনিয়র কর্মকর্তারা বাসা পেয়ে থাকেন। নিজেদের আত্মমর্যাদার কারণে কর্মকর্তারা কম বাসা ভাড়া দেন। তবে অধিকাংশ কর্মচারী তাদের বাসা ভাড়া দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন। প্রতি বছর বাসা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ পেলে তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হয়। কয়েকজন কর্মচারীর বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সেই শাস্তি আমলে নিচ্ছেন না কর্মচারীরা। তারা বাসা ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
জানা গেছে, ঢাকা নগরীতে প্রকট আবাসন সংকটকে পুঁজি করে কোনো কোনো বাড়ির বরাদ্দপ্রাপ্তরা মেস বানিয়ে ভাড়া দেন। এসব মেসে বেশিরভাগই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের ছাত্রী বা কর্মজীবী নারীরা থাকেন। ঢাবির প্রথম বর্ষের ছাত্রী, যারা হলে সিট পাচ্ছেন না, তারাও উচ্চহারে ভাড়া দিয়ে থাকতে
বাধ্য হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসাগুলো সবচেয়ে বেশি সাবলেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার অনেক বাসায় নীলক্ষেতের দোকানিরা বেশি টাকায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া নিয়ে থাকছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর নীলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ১০৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ফ্ল্যাটে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছেন। কিছু কিছু বাসার বরাদ্দপ্রাপ্ত মালিকরা পুরো ফ্ল্যাটই ভাড়া দিয়ে নিজেরা পরিবারসহ বারান্দায় থাকছেন। এতে করে মাস শেষে তারা একটা মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন। ভাড়াটিয়াদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও গ্যাসের অপচয় হচ্ছে প্রতিদিনই। কোনো কোনো বাড়ির মালিক ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ির ভেতর ও বাইরের কাঠামো নষ্ট করে ফেলেছেন। কেউ কেউ বারান্দা টিন দিয়ে ঘিরে বিল্ডিংয়ের সৌন্দর্য নষ্ট করেছেন। কোনো রুমে ৭-৮টি চৌকি ফেলে মেস বানিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি ১৮শ' থেকে দুই হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার একটি রুম ভাড়া দেওয়ার জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অ্যাডভান্স নেওয়া হচ্ছে।
বাসা বরাদ্দেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এই আবাসিক এলাকায় প্রায় সব ফ্ল্যাট মালিকই একাধিক রুম ভাড়া দিয়ে বছর শেষে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক বাসা সাবলেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। এসব কারণে গত বছর বেশকিছু বাসার বরাদ্দ বাতিল করা হয়। অভিযুক্ত কয়েকজনের বেতনও বন্ধ রাখা হয়েছিল। কেউ বাসাকে সাবলেট দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবারও বাসা ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এগুলো খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন