ঢাবি’র ৩ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
লিংকন মাহমুদ, ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আফজাল হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন ও মিরাজউদ্দিন। এ তিন প্রকৌশলী ৫ মাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন ভেতন-ভাতা পাবে না। এছাড়া আগামী ৩ বছর তাদের সবধরনের পদোন্নতি বন্ধ থাকবে। রোকেয়া হলের একটি ভবন ধসে পড়ায় ব্যর্থতার দায়ভার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়। অক্টোবরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সিন্ডিকেট তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলেও নতুন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বছরের ১৮ই অক্টোবর রোকেয়া হলের চামেলী ভবনের ৫ম তলার বিশাল ভিম ধসে পড়ে। ওই ভবনটির নির্মাণে কাজের সঙ্গে এ ৩ প্রকৌশলী জড়িত ছিলেন। ভিম ধসে পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসিকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও কাজে অসহযোগিতার প্রমাণ পেয়েছে। শনিবার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সিন্ডিকেট গ্রহণ করেছে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ভবনটির কাজে প্রয়োজনীয় সিমেন্ট ও রড দেয়া হয়নি। শুধু বালি দিয়ে কাজ শেষ করা হয়েছে। ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকৌশলীরা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এ অনিয়ম করেছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের মার্চের শেষদিকে ওই ভবনটির কাজ শেষ হয়। আগে ওই ভবনটির দুই অংশ চারতলা পর্যন্ত ও এক অংশ দুইতলা পর্যন্ত ছিল। ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা দূর করতে দুই অংশ চারতলা থেকে পাঁচতলা ও এক অংশ দুইতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত করা হয়। মার্চের শেষদিকে কাজ শেষ হয়। নতুন করে ৩২টি কক্ষ তৈরি করা হয়। তাতে বাস করছেন ২৬০ জন ছাত্রী। প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি সংস্কার করা হয়। সাত মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ছাদ ধসে পড়ে। ছাড় ধসে পড়ায় এখন পুরো ভবনের ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। ওই ভবনের প্রায় সাড়ে সাতশ’ ছাত্রী বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। ভবনটির পুরো অংশজুড়েই ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া সময়ে-অসময়ে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে বলে ছাত্রীরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি ভবনটি পরিদর্শন করে নানা ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে। ওই ভবনটিতে প্রায় সাড়ে সাতশ’ ছাত্রী বাস করছেন। ছাদ ধসে পড়ায় এখন পুরো ভবন নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছাত্রীরা তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া বড় ধরনের বাতাস এলেও ভবনটি নড়াচড়া করে বলে ছাত্রীরা জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি সরজমিন গিয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন অংশের ফাটল। তদন্ত কমিটির অন্যতম সিন্ডিকেট সদস্য লুৎফুর রহমান বলেন, আমরা ভবনটি পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন অংশে ফাটল রয়েছে। লোহার রডগুলোও আমাদের কাছে দুর্বল মনে হয়েছে। কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক আকতারুজ্জামান বলেন, ভবনটিতে অনেক ত্রুটি রয়েছে। নিচ থেকে তাকালেই তা দেখা যায়। তিনি বলেন, বিশাল ভবনটি কিভাবে করা হলো তার নকশা আমরা খোঁজে পাইনি। এতে বোঝা যায়, অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল। হল প্রভোস্ট অধ্যাপক লায়লা নূর ইসলাম বলেন, অল্পের জন্য আমরা বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। তিনি বলেন, যে অংশ ধসে পড়েছে সেখানে ছাত্রীরা থাকলে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় ছিল না। তিনি বলেন, ছাত্রীরা তাদের আতঙ্কের কথা জানাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া বড় ধরনের বাতাস বা মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ভবনটিতে কম্পন সৃষ্টি হয়। ২০০৮ সালের জুলাই মাসের ভূমিকম্পে হলটির অনার্স ভবনে বিশাল ফাটল দেখা দেয়। পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি ওই ভবনটি বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করে। কয়েক দিনের মধ্যেই ছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। ওই ভবনটি এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
লিংকন মাহমুদ, ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আফজাল হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন ও মিরাজউদ্দিন। এ তিন প্রকৌশলী ৫ মাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন ভেতন-ভাতা পাবে না। এছাড়া আগামী ৩ বছর তাদের সবধরনের পদোন্নতি বন্ধ থাকবে। রোকেয়া হলের একটি ভবন ধসে পড়ায় ব্যর্থতার দায়ভার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়। অক্টোবরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সিন্ডিকেট তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলেও নতুন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বছরের ১৮ই অক্টোবর রোকেয়া হলের চামেলী ভবনের ৫ম তলার বিশাল ভিম ধসে পড়ে। ওই ভবনটির নির্মাণে কাজের সঙ্গে এ ৩ প্রকৌশলী জড়িত ছিলেন। ভিম ধসে পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসিকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও কাজে অসহযোগিতার প্রমাণ পেয়েছে। শনিবার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সিন্ডিকেট গ্রহণ করেছে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ভবনটির কাজে প্রয়োজনীয় সিমেন্ট ও রড দেয়া হয়নি। শুধু বালি দিয়ে কাজ শেষ করা হয়েছে। ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকৌশলীরা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এ অনিয়ম করেছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের মার্চের শেষদিকে ওই ভবনটির কাজ শেষ হয়। আগে ওই ভবনটির দুই অংশ চারতলা পর্যন্ত ও এক অংশ দুইতলা পর্যন্ত ছিল। ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা দূর করতে দুই অংশ চারতলা থেকে পাঁচতলা ও এক অংশ দুইতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত করা হয়। মার্চের শেষদিকে কাজ শেষ হয়। নতুন করে ৩২টি কক্ষ তৈরি করা হয়। তাতে বাস করছেন ২৬০ জন ছাত্রী। প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি সংস্কার করা হয়। সাত মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ছাদ ধসে পড়ে। ছাড় ধসে পড়ায় এখন পুরো ভবনের ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। ওই ভবনের প্রায় সাড়ে সাতশ’ ছাত্রী বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। ভবনটির পুরো অংশজুড়েই ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া সময়ে-অসময়ে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে বলে ছাত্রীরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি ভবনটি পরিদর্শন করে নানা ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে। ওই ভবনটিতে প্রায় সাড়ে সাতশ’ ছাত্রী বাস করছেন। ছাদ ধসে পড়ায় এখন পুরো ভবন নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছাত্রীরা তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া বড় ধরনের বাতাস এলেও ভবনটি নড়াচড়া করে বলে ছাত্রীরা জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি সরজমিন গিয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন অংশের ফাটল। তদন্ত কমিটির অন্যতম সিন্ডিকেট সদস্য লুৎফুর রহমান বলেন, আমরা ভবনটি পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন অংশে ফাটল রয়েছে। লোহার রডগুলোও আমাদের কাছে দুর্বল মনে হয়েছে। কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক আকতারুজ্জামান বলেন, ভবনটিতে অনেক ত্রুটি রয়েছে। নিচ থেকে তাকালেই তা দেখা যায়। তিনি বলেন, বিশাল ভবনটি কিভাবে করা হলো তার নকশা আমরা খোঁজে পাইনি। এতে বোঝা যায়, অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল। হল প্রভোস্ট অধ্যাপক লায়লা নূর ইসলাম বলেন, অল্পের জন্য আমরা বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। তিনি বলেন, যে অংশ ধসে পড়েছে সেখানে ছাত্রীরা থাকলে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় ছিল না। তিনি বলেন, ছাত্রীরা তাদের আতঙ্কের কথা জানাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া বড় ধরনের বাতাস বা মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ভবনটিতে কম্পন সৃষ্টি হয়। ২০০৮ সালের জুলাই মাসের ভূমিকম্পে হলটির অনার্স ভবনে বিশাল ফাটল দেখা দেয়। পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি ওই ভবনটি বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করে। কয়েক দিনের মধ্যেই ছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। ওই ভবনটি এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন